৯ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, বিকাল ৩:৫১

মিউচুয়াল ক্লাব নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী

প্রাইমনারায়ণগঞ্জ.কম

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ডের পাইকপাড়াস্থ ঐতিহ্যবাহী মিউচুয়াল ক্লাবের নতুন ও আধুনিক ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফেইথ এন্ড ফেয়ার এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মশিউর রহমান ও তার পক্ষে মোস্তাক আহমেদ রবিন এ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

নারায়ণগঞ্জের অন্যতম ঐহিত্যবাহী ক্লাব হচ্ছে পাইকপাড়ার মিউচুয়াল ক্লাব। এই ক্লাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এসেছিলেন। বেশ পুরোনো হওয়ায় ক্লাবের পুরোনো ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এবং নতুন ও আধুনিক ভবন নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। এ ভবন নির্মাণের দায়িত্ব পান মশিউর রহমানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফেইথ এন্ড ফেয়ার এন্টারপ্রাইজ। পাইকপাড়া এলাকার মোস্তাক আহমেদ রবিন ও খালেদ ঠিকাদার মশিউর রহমানের পক্ষে কাজটি করছেন বলে জানায় স্থানীয়রা। আর এ রবিন ও খালেদই নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে বলেও জানায় স্থানীয়রা।

ভবন নির্মাণে যে ধরনের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কথা ছিলো তার চেয়ে অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে ঠিকাদারের লোকজন হিসাবে পরিচিত পাইকপাড়ার মোস্তাক আহমেদ রবিন ও খালেদ। এসব দেখে এলাকাবাসী নির্মাণ কাজে বাধা দেয় এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার কাউন্সিলরকে বিষয়টি সম্পর্কে জানান। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ক এসিষ্টেন্ট এর মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল ইসলামকেও বিষয়টি জানানো হয়।

স্থানীয়রা আরও জানায়, ভবনটির পিলার নির্মাণের জন্য পাথর আনা হয়েছে যা অত্যন্ত নিম্নমানের। এ ধরনের পাথরকে জিরা পাথর বলা হয়, যা মোটেও পিলার নির্মাণের জন্য উপযোগী নয় বলে জানায় তারা। এ পাথর দিয়ে পিলার বা ভবন নির্মাণ করা হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাই তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।

সরেজমিনে দেখা যায়, পিলার নির্মাণের জন্য জিরা পাথর বা নুড়ি পাথর আনা হয়েছে, যা অত্যন্ত নিম্নমানের। এ পাথর দেখে স্থানীয়রা কাজ করতে বাধা দেয়।

পাইকপাড়ার এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, ‘ভবনের কাজেই ৩/৪ গ্রেডের পাথর ব্যবহারের কথা। কিন্তু ঠিকাদারের লোক তথা মোস্তাক আহমেদ রবিন ওরফে চাপাবাজ রবিন নিম্নমানের পাথর ব্যবহার করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাধা দিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। তাই কাউন্সিলরকে জানিয়েছি।’

আরেকজন অভিযোগ করে বলেন, ‘ভবনটির কাজে জিরা পাথর তথা নুড়ি পাথর ব্যবহার করছেন ঠিকাদারের লোকজন। আমরা এগুলো পর তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি এবং সিটি কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল সাহেবকেও বিষয়টি জানিয়েছি। ’

এবিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আজগর হোসেন বলেন, আমি কাজটি বন্ধ করে দিয়েছি। আগামীকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখে তারপর ব্যবস্থা নিবো। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী হলে কাজ বন্ধ থাকবে।

সিটি কর্পোরেশনের আরেক ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল ইসলাম জানান, আমাকে ওয়ার্ক এসিষ্টেন্ট ও কাউন্সিলর সাহেব ফোন করে বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়েছেন। আমি ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। কাল সকালে আমি বিষয়টি দেখবো।

কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। তারপর ঘটনাস্থলে গিয়ে নিম্নমানের পাথর দেখে আমি বিষয়টি মেয়রকে জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার এবং ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

বাছাইকৃত সংবাদ

No posts found.